শিশির
বিশ্বাস
এয়ার ফোর্সের একজন পাইলটের কাজ অন্যদের কাছে যত রোমাঞ্চকরই মনে হোক‚ আসলে একেবারেই গতানুগতিক। অন্তত উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারির কাছে। সেই ভোর
সকালে ঘুম থেকে ওঠা। দ্রুত তৈরি হয়ে নিয়ে
এয়ার বেসের কন্ট্রোল সেন্টারে রিপোর্ট। জানতে পারা যাবে দিনের মিশন কিছু রয়েছে
কিনা। অতঃপর
ক্যান্টিনে ব্রেকফার্স্ট। খালি পেটে পাইলটদের ককপিটে বসা বারণ।
বলা বাহুল্য এয়ারবেসের হ্যাঙ্গারে ততক্ষণে অন্য কাজ শুরু হয়ে গেছে। নির্ধারিত ফাইটার প্লেন
রি–ফুয়েলিং আর রুটিন চেকআপ। পাইলট নিজেও বসে নেই। ব্রেকফাস্ট শেষ করে চলে এসেছেন
নিজের প্লেনের কাছে। পরনে ফ্লাইট স্যুট। মাথায় হেমলেট। ককপিটে উঠে যথাস্থানে বসেই
ক্যানোপি নামিয়ে দিয়ে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে টেক–অফ সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা। সেটা
পাওয়া গেলেই হাত বাড়াও স্টার্টারের দিকে। ফাইটার জেট চলতে শুরু করবে প্রধান রানওয়ের
দিকে। তারপর রানওয়ে ধরে ক্রমান্বয়ে গতি বাড়িয়ে যাও। ক্রমে চড়া হতে থাকবে
ইঞ্জিনের গর্জন। নির্দিষ্ট স্পিডে পৌঁছলেই নাক উঁচিয়ে ফাইটার ডানা মেলে দেবে আকাশে। বিপুল গর্জনে পৌঁছে যাবে
অনেক উঁচুতে। যেদিন যেমন মিশন‚
সেই অনুসারে এল.ও.সি বরাবর এক দেড় ঘন্টা চক্কর দিয়ে ফের নেমে আসা।
যত রোমাঞ্চই থাক‚ উইং কমান্ডার অভি
পাটোয়ারির কাছে ধরাবাঁধা এই কাজ এখন নিতান্তই গতানুগতিক। এয়ার ফোর্সের একজন জঙ্গী
পাইলটের অতি
পছন্দের যে কাজ‚ তা মেলে কদাচিৎ। বছর
কয়েক আগে কার্গিল যুদ্ধের সময় তেমন একটা সুযোগ এসেছিল। তবে অভি পাটোয়ারি তখন
একেবারেই নতুন। গ্রাউন্ড ডিউটি। কর্গিল যুদ্ধে ফাইটার নিয়ে আকাশে ওড়ার সুযোগ হয়নি।
যাদের সেই সুযোগ মিলত তাদের কাছেই শুনত রোমহর্ষক সব গল্প। পাহাড়ের মাথায় কিভাবে
শত্রু বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তবু গোড়ার দিকে অন্য খবরও আসত। কিন্তু তারপর বন্ধু দেশ
থেকে যখন লেজার গাইডেড মিসাইল হাতে এসে গেল‚
ইন্ডিয়ান জঙ্গী পাইলটেদের দাপটে অন্য পক্ষে শুধুই হাহাকার। অভি পাটোয়ারির আপশোশ
তাই রয়েই গেছে।
সেই আপশোশ মিটিয়ে নেবার একটা সুযোগ মিলতেও পারে এবার। গত কাল থেকেই তাই
উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে। পাকিস্তানে এক জঙ্গী শিবির আচমকা আঘাতে সেদিন গুঁড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে। ওদিক থেকে তাৎক্ষণিক কিছু প্রাত্যাঘাত হয়তো আসতেও পারে। এয়ারবেসে তাই
হাই অ্যালার্ট চলছে। ব্যস্ততা চরমে। তার উপর আজ সকাল থেকে সীমানার ওপারের আকাশ শুনশান। একটি যাত্রীবাহী
বিমানও নেই। পাকিস্তান হঠাৎই তাদের এয়ারস্পেস বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাপারটা অতি
সন্দেহজনক। এমন
ব্যবস্থা একমাত্র বিমান আক্রমণের আগেই নেওয়া হয়ে থাকে। অগত্যা রেডার কন্ট্রোল স্টেশনে এক ঝাঁক ফ্লাইট
কন্ট্রোলার স্ক্রিনের উপর চোখ রেখে বসে আছে।
ওদিকে এয়ারেবেসে একঝাঁক পাইলটের সঙ্গে উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারিও ফ্লাইট
স্যুট পরে প্রস্তুত। সকালে কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট করতেই জানতে পেরেছে আজ প্রথম দফায় যে ছয়টা মিগ
মিশনে বের হবে তার মধ্যে সেও রয়েছে। খবরটা জানার পরেই উৎসাহে ফুটছে। ভিতরে অন্য এক
তাগিদ। ছটফটানি। পছন্দের ফাইটার মিগ–২১ বাইস নিয়ে নিয়মিতই উড়তে হয়। কিন্তু আজকের
মতো উত্তেজনার লেশমাত্রও তাতে নেই। শত্রু দেশের জঙ্গী বিমানের সঙ্গে আকাশ যুদ্ধ!
ওদের ভাষায় ‘ডগ ফাইট’‚ এসবের রোমাঞ্চই
আলাদা। ফাইনাল সিগন্যাল আসতেই সোজা রানওয়েতে।
তাপমাত্রা আজ দশ ডিগ্রির আশপাশে। অতি পরিচিত মিগ–২১ বাইসন রানওয়ের পাশে
তৈরি হয়ে রয়েছে। যে
যার প্লেনে উঠে বসেছে তারপর। প্রথমেই অভি পাটোয়ারির ফাইটার। আগে ওড়ার সুযোগ ওরই। ক্যানোপি নামিয়ে দিয়ে
ডান হাতের বুড়ো আঙুলটা একবার তুলে ধরল ও। তারপরেই গ্রাউন্ড স্টার্ট বাটন প্রেস করতেই
প্লেন রানওয়ে ধরে ছুটতে শুরু করল। গতি বাড়ার সঙ্গে ইঞ্জিনের গরগর শব্দ বাড়তে থাকল
ক্রমশ। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আজকের মিশন কিছু আলাদা। ফাইটারের দু’দিকের
ডানার নীচে লোড করা রয়েছে একাধিক মিসাইল। টেক অফ স্পিড অন্য সময়ের থেকে কিছু বেশিই
হবে আজ। অগত্যা থ্রটল করে রানওয়ের উপর বিমানের গতি যথানিয়মে বাড়িয়ে চলল অভি। টেক অফ স্পীডে পৌঁছতেই ছোট্ট
ঝাঁকুনি দিয়ে ফাইটার মাথা উঁচিয়ে ভেসে পড়ল আকাশে।
উড়ন্ত জঙ্গী বিমানে ইঞ্জিন স্পীড‚
এয়ার স্পীড আর ফ্লাইং অলটিচুডের দিকে সর্বদা নজর রাখা পাইলটের এক জরুরি কাজ। দ্রুত
সেইমতো ব্যবস্থা। এর অন্যথা হলেই বিপদ। অধিকাংশ ফাইটার জেট দুর্ঘটনায় পড়ার পিছনে
এটাই বড় কারণ। মিগ–২১ ফাইটারও ব্যতিক্রম নয়। এক দমে ১৫ হাজার ফিট উঁচুতে উঠে এসে
ফাইটারের গতি ৬০০ কিমিতে ফিক্স করে অভি পাটোয়ারি এরপর দ্রুত হাত বাড়াল রেডার
সুইচের দিকে।
কারণ ছিল। ওদের ছয়টা ফাইটার আকাশে ওড়ার পরেই এয়ারবেসের রেডারে হঠাৎই ফুটে
উঠেছিল গোটা কয়েক বিন্দু। সেই বিন্দুগুলির দিকে তাকিয়ে অভিজ্ঞ রেডার অপারেট
অফিসারের বুঝে নিতে অসুবিধা হয়নি আসলে সেগুলি কী। অন্তত হাফ ডজন জঙ্গী বিমান
পাকিস্তানের দিক থেকে এল.ও.সি লক্ষ্য করে ছুটে আসছে। মুহূর্তে সেই খবর চলে
গেছে দিকে দিকে। ব্যতিক্রম নয় অভি পাটোয়ারিও। ১৫ হাজার ফিট উঁচুতে ফাইটার থিতু করে
তাই হাত বাড়িয়েছিল রেডারের দিকে।
ককপিটের স্বচ্ছ ক্যানোপির ভিতর দিয়ে সহজেই চারপাশে নজর রাখা যায়। আকাশে ঘন
মেঘ না থাকলে দেখা যায় বহু দূর পর্যন্ত। তবু জঙ্গী বিমানের পাইলটের কাছে রেডারই হল
আসল চোখ।
ডানদিকে রেডার কন্ট্রোল প্যানেলে হাত বাড়িয়ে চট করে সুইচ অন করে দিল ও। একটু একটু করে রেডার
স্ক্রিনে ফুটে উঠল চারপাশের আকাশ। সেদিকে তাকিয়ে দু’চোখ প্রায় বিস্ফারিত হয়ে উঠল
অভি পাটোয়ারি। এয়ারবেস থেকে অল্প আগে যে ইনফরমেশন পেয়েছে‚ তার সঙ্গে মিল সামান্যই। ব্যাপারটা সামলে নিতে অবশ্য সময় লাগল না। একজন পাইলটকে এজন্য প্রস্তুত
থাকতেই হয়।
আকাশের উঁচুতে ফাইটার জেটের রেডারের সামনে থাকে খোলা আকাশ। গ্রাউন্ড রেডার
থেকে অনেক নিখুঁত হিসেব পাওয়া যায়। রেডার ডায়ালে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে হাফ স্কোয়াড্রন নয়‚ সামনে শত্রুপক্ষের অন্তত দেড় স্কোয়াড্রন ফাইটার। সম্ভবত জে এফ-১৭ আর মিরাজ। ওর মিগ–২১ থেকে অনেক উন্নত আর আধুনিক। তবে তার সবগুলোই অধিকৃত
কাশ্মীরের ওধারে পাকিস্তানের আকাশে। অর্থাৎ কন্ট্রোল লাইন তথা এল.ও.সির অনেক দূরে।
অযথা ব্যস্ত হবার দরকার নেই। তবে এয়ারবেসে জানিয়ে দেওয়া দরকার। এই মুহূর্তে খবরটা
ওদের কাছে যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। এয়ারবেস থেকে মোট ছয়টা প্লেন আকাশে উড়েছে। শত্রু
বিমানের তুলনায় সংখ্যাটা একেবারেই সামান্য।
শুধু সংখ্যায় কম নয়‚
টেকনিকাল দিক দিয়েও মিগ–২১ শত্রুপক্ষের বিমানগুলোর চাইতে অনেক পিছিয়ে। অনেক পুরোনো
দিনের। তাই একটানা বেশি ধকল সহ্য করতে পারে না। তবু অভিজ্ঞতায় জানে‚ ওর এই ফাইটারে সুবিধাও কিছু কম নয়। আকারে ছোট অথচ সুপারসনিক হবার কারণে
অতি দ্রুত দিক পরিবর্তন করতে পারে। ফলে নিখুঁতভাবে লক্ষ্য স্থির করতে শত্রুপক্ষের
অতি দক্ষ পাইলটও সমস্যায় পড়ে যায়। আকাশে বায়ুযুদ্ধ‚ ওদের পরিভাষায় ‘ডগ ফাইট’–এ এটা বেজায় অ্যাডভান্টেজ। ভিয়েতনাম যুদ্ধে মিগ
ফাইটারের এই অ্যাডভান্টেজ সম্বল করে ভিয়েতনামী পাইলট আমেরিকার অপেক্ষাকৃত উন্নত
মানের বিমান বাহিনীকে বহু ক্ষেত্রে টেক্কা দিয়ে গেছে।
বাকি পাঁচটি ফাইটার অনেকটাই পিছনে তখনো। ফ্রন্ট প্যানেলের উপর দ্রুত একবার চোখ
বুলিয়ে সামান্য বাঁকা হাসি ফুটে উঠল অভি পাটোয়ারির ঠোঁটের কোনায়। সারা দুনিয়ায় মিগ–২১
এখন বুড়ো ঘোড়া। জনান্তিকে অনেকেই বলে ফ্লাইং কফিন। কিন্তু ও নিজে তো তেমন নয়। এ পর্যন্ত
ডগফাইটের ট্রেনিং অভিজ্ঞতা নেহাত কম তো নয়। কীভাবে আকাশ যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দিতে হয়‚ ভালই জানা আছে। আর যতই বুড়ে ঘোড়া হোক কাজটা মিগ–২১ ফাইটারে সওয়ার হয়ে সম্পূর্ণ
করায় কিছু সুবিধেও তো রয়েছে। আর এই মুহূর্তে ওর ফাইটার কাজ করে চলেছে একদম নিখুঁত। বিন্দুমাত্র গোলমাল নেই।
এয়ারস্পীড ইন্ডিকেটারে চোখ রেখে ফাইটারের গতি কিছু কমিয়ে দিল ও। তারপর নেভিগেশন
সুইচের দিকে হাত বাড়িয়ে দ্রুত আরও উপরে। এই মুহূর্তে আকাশের যত উঁচুতে থাকা যায়
ততই সুবিধা।
কিন্তু ভাবনার সঙ্গে বাস্তব সব সময় মেলে না। সামনে শত্রুপক্ষের ফাইটারের
ঝাঁক তখনো অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে ঢোকেনি। সন্দেহ নেই‚ ইতিমধ্যে ভারতের আকাশে ছয়টা মিগ দেখে বুঝে নিতে চাইছে পিছনে এমন আরো
কতগুলো রয়েছে। ওরা
কী ওখান থেকেই দূর পাল্লার মিসাইল ছুঁড়বে? না কী এগিয়ে আসবে আরো?
ককপিটে বসে অভি পাটোয়ারি সেই হিসেবই করছিল। হঠাৎই অধিকৃত কাশ্মীরের কোনো
এয়ারবেস থেকে চকিতে উড়ে এল একসঙ্গে দশটা ফ্যালকন অর্থাৎ এফ–১৬ ফাইটার। শত্রুপক্ষের
উদ্দেশ্য মুহূর্তে পরিষ্কার হয়ে গেল যেন। ফ্যালকন অত্যাধুনিক বিমান। ডগ ফাইট অর্থাৎ আকাশ
যুদ্ধে আরও নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করার ব্যবস্থা আছে। সন্দেহ নেই‚ পিছনের ফাইটারগুলো ডগ ফাইটে অংশ নেবে প্রয়োজন হলেই। আসল কাজের দায়িত্ব মঞ্চে
নতুন আসা দশটা ফ্যালকনের। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এয়ার টু এয়ার‚
নয়তো এয়ার টু গ্রাউন্ড মিসাইল ছুটে আসবে অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে দশটা ফ্যালকন
থেকেই। টার্গেটে শুধু ওদের ছয়টা ফাইটার নয়‚
এদিকের আর্মি ঘাঁটিগুলোও।
বেশি ভাবার সময় নেই। দলের অন্য পাঁচটি ফাইটার অনেক পিছনে। এই মুহূর্তে যা
করবার করতে হবে ওকেই। এয়ারবেস থেকে ওই সময়েই মেসেজ চলে এল‚ শত্রুপক্ষের ফ্যালকন তাদের রেডারেও ধরা পড়েছে। শত্রুর মোকাবিলায় বিভিন্ন
এয়ারবেস থেকে রওনা হয়ে পড়েছে এক ঝাঁক সুখোই–৩০‚ মিরাজ–২০০০ আর মিগ–২৯।
মাভৈ। বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে মুহূর্তে সবচেয়ে কাছের ফ্যালকন–১৬
ফাইটারকে নিশানা করে ক্ষেপনাস্ত্র ‘লক’ করে ফেলল অভি পাটোয়ারি। কাজটা খুব সহজ নয়
অবশ্য। অত্যন্ত জটিল। তবু বেশি সময় লাগল না। মুহূর্তে এয়ারবেসে খবরটা জানিয়ে দিয়ে ফাইটার
ছোটাল এল.ও.সি অর্থাৎ কন্ট্রোল লাইনের দিকে।
ক্ষেপণাস্ত্র ‘লক’ করার
অর্থ হল দুই বিমানের মাঝে কোনও বাধা অর্থাৎ পাহাড় বা
অন্য কোনো আকাশযান এসে না পড়লে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লে সোজা গিয়ে আঘাত করবে নিশানা করা
বিমানে।
এখন লক্ষ্যের যত কাছে আসা যায় ততই আঘাতের মাত্রা বেশি। সেই
উদ্দেশ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল কন্ট্রোল লাইনের দিকে। হঠাৎই টার্গেট প্লেন পিছন ফিরে
পালাতে শুরু করল। ব্যাপারটা
বুঝতে বাকি থাকে না অভি পাটোয়ারির। টার্গেট লক করতেই অত্যাধুনিক ফ্যালকন–১৬ তার
রেডারে ধরে ফেলেছে ব্যাপারটা। উদ্দেশ্য মুলতুবি রেখে তাই সরে পড়তে চাইছে। প্রায়
গোঁত্তা খেয়ে নামতে শুরু করেছে নীচের দিকে। লক্ষ্য কোনো পাহাড়ের আড়াল।
কাছাকাছি আরো নয়টা ফ্যালকন। দূরের আকাশে আরও দেড় স্কোয়াড্রন শত্রু বিমান।
সামান্য এগোলেই কন্ট্রোল লাইন পার হয়ে পাকিস্তান কাশ্মীর। কিন্তু কোনো কিছুই দমাতে
পারল না বৈমানিক অভি পাটোয়ারিকে। মাথার ভিতরে তখন একই ভাবনা‚ মারো‚ সুযোগ যখন পাওয়া গেছে মারো ওকে।
প্রায় পনোরো হাজার ফুট উঁচুতে ডগফাইট চলল প্রায় মিনিট পাঁচেক। ফ্যালকনের পিছু নিয়ে অভি
পাটোয়ারি তখন ঢুকে পড়েছে পাকিস্তান কাশ্মীরের আকাশে। মিগ–২১ ফাইটারের গতি ঘণ্টায়
৯০০ কিমি। দুই বিমানের দূরত্ব কমে এসেছে অনেকটাই। সুযোগটা তাই আর হাতছাড়া করেনি ও।
হাত বাড়িয়ে শর্ট রেঞ্জের আর–৭৩ এয়ার টু এয়ার মিসাইল চার্জ করল। জয় হিন্দ!
একরাশ আগুন ঝরিয়ে মিসাইলটা নিখুঁত লক্ষ্যে আঘাত করল অদূরে শত্রু বিমানকে।
জ্বলে উঠল দাউ–দাউ করে।
লক্ষ্য ধরাশায়ী হতে অভি এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে নিজের প্লেন ঘোরাল।
সুবিধা থাকলেও পরের লক্ষ্য স্থির করার উপায় নেই। বেচারা বুড়ো ঘোড়া মিগ–২১
ফাইটারের উপর বিগত কয়েক মিনিট বড্ড বেশি রকম চাপ দিয়ে ফেলা হয়েছে। এয়ার বেসে ফিরে
যাওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই। ফাইটারের স্পীড আরও কিছু বাড়াতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু
সেটা ঠিক হবে কিনা ভাবছিল ও। তার মধ্যেই ঘটে গেল অঘটনটা। হঠাৎই পিছনে ইঞ্জিনের ভিতর থেকে বেয়াড়া একটা
শব্দ। মুহূর্তে
গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে শুরু হল।
যা বুঝবার
ততক্ষণে বুঝে ফেলেছে অভি পাটোয়ারি। বেচারা বুড়ো ঘোড়ার ইঞ্জিন ধকলটা আর টানতে
পারেনি। আগুন ধরে গেছে। সেই মুহূর্তে পিছনে অন্য এক ফাইটারের পাইলট ফ্লাইট লেফটেনান্ট বিনোদ
কামতের সতর্কবার্তা ইয়ার ফোনে ভেসে এল‚
পাটোয়ারি সার‚ ইউ আর অন ফায়ার, গো আউট…।’
ব্যাপারটা আর মিনিটখানেই পরে হলেই ও সীমান্ত
পার হয়ে যেতে পারত। কিন্তু অযথা আপশোশ করে
লাভ নেই। বেসামাল ফাইটার ততক্ষণে গোঁত্তা খেয়ে নামতে শুরু করেছে। সময় নষ্ট না করে
ও ইজেক্ট লিভারে টান দিতে মুহূর্তেই হাওয়ায় উড়ে গেল শরীরটা।
জলন্ত ফাইটার থেকে সঠিকভাবে সেফ ইজেক্ট করা খুব সহজ নয়। ককপিটের ক্যানোপি
খুলে যেতেই প্রচণ্ড বেগে ছিটকে বেরিয়ে আসে শরীর। দেহের প্রতিটি পেশী আর ভারসাম্য সঠিকভাবে
ধরে রাখতে না পারলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। জ্ঞান হারিয়ে ফেলে অনেকেই। কিন্তু
বৈমানিক অভি পাটোয়ারির ক্ষেত্রে তেমন কিছুই হয়নি। বরং যথা সময়ে প্যারাসুট খুলে
যাবার পর মাথায় অন্য ভাবনা পাক খেতে শুরু করেছে। বাতাস বইছে পুব দিক থেকে। অর্থাৎ
একেবারেই অনুকূল নয়। উলটো দিকে থেকে হলে মাটিতে পড়ার আগে সীমান্ত পার হয়ে যেতেও পারত। এক্ষেত্রে আরও পশ্চিম অর্থাৎ পাকিস্তান
কাশ্মীরের দিকে ভেসে যাবার সম্ভাবনা। শত্রু দেশের মাটিতে ল্যান্ড করা একজন জঙ্গী
পাইলটের কাছে মোটেই স্বস্তির নয়। উন্মত্ত জনতার হাতে পড়লে মৃত্যু পর্যন্ত হতে
পারে। পাকিস্তান পুলিশের হাতে পড়লেও ভাল কিছু ঘটবে‚ এমন সম্ভাবনা কম। কার্গিল যুদ্ধের সময় পাইলট নচিকেতা ধরা পড়েছিল ওদের
হাতে। গুলি করে মারা হয়েছিল তাঁকে। অজান্তেই অভির হাত চলে গেল কোমরের পিস্তলের
দিকে। যাই হোক না কেন‚ সহজে হার মানবে না।
দুঃশ্চিন্তাগুলো তাই মাথা থেকে নামিয়ে ফেলতে পেরেছিল আগেই। যথাসময়ে প্যারাসুট
ল্যান্ড করতে গা–ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়াতে সময় লাগেনি। ভাগ্যই বলতে হবে‚ পাহাড়ের ঢালে যেখানে নেমেছে কাছাকাছি জনমানুষ নেই। চারপাশে হালকা ঝোপঝাড়।
লোকালয় কিছু দূরেই মনে হচ্ছে। সময় নষ্ট না করে দড়িদড়া সহ প্যারাসুট চটপট গুটিয়ে
ফেলল। কাছেই এক ঝোপের ভিতর গুঁজে দিয়ে চলতে শুরু করল। কাছাকাছি মানুষ নেই বটে‚ কিন্তু নামতে দেখেছে অনেকেই। পুলিশ আর আর্মি তো বটেই‚ স্থানীয় মানুষও হয়তো বাদ যায়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থান ত্যাগ করে দূরে
সরে পড়াই মঙ্গল।
হিসেবে ভুল হয়নি। ঘণ্টা খানেকও পার
হয়নি তখন। কাছাকাছি মানুষের আওয়াজে টের পেল‚
ওকে খোঁজা শুরু হয়ে গেছে। যে রকম চিৎকার চ্যাঁচামেচি হচ্ছে‚ তা কোনোমতেই পুলিশ বা আর্মির নয়। সাধরণ মানুষ। তবে যথেষ্ট মাথা খাটিয়ে
গোটানো প্যারাসুট ও একটা ঝোপের মধ্যে গুঁজে দিয়েছে। এখনই খুঁজে বের করা অসাধ্য।
তবু আরও সতর্ক হল। যে
পাহাড়–জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ও পথ চলেছে‚
তার খানিক নীচেই পাহাড়ের গা বেয়ে পাকা সড়ক। নামতে হলে ওই সড়ক পেরিয়ে যেতে হবে।
কিন্তু যা অবস্থা‚ এখনি সেটা সম্ভব নয়। রাতের জন্য
অপেক্ষা করা দরকার।
উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারি যথেষ্ট সতর্ক হয়েই পথ চলছিল এরপর। বলা বাহুল্য
সেই কারণে খুব বেশি এগোতে পারেনি। দুপুরের দিকে সুর্য তখন পশ্চিম আকাশে। হঠাৎই
পাহাড়ের গায়ে পাথর সাজিয়ে তৈরি একটা গুহামতো নজরে পড়ল। সম্ভবত ভেড়াওয়ালাদের। এই ধরণের গুহার কাছে
সাধারণত কোনো জলের উৎস থাকে। কিন্তু সেজন্য নয়‚ অভি সন্ধে পর্যন্ত গা ঢাকা দেবার জন্য গুহাটাকে বেছে নিল দুটো কারণে। এক‚ গা ঢাকা দেবার পক্ষে পরিত্যক্ত গুহাটা যথেষ্টই আরামদায়ক। দুই‚ ঘন ঘন চড়াই ভাঙার কারণে পরিশ্রম কম হয়নি। তৃষ্ণায় ফেটে যাচ্ছে বুক। কিন্তু চারপাশে যা
অবস্থা চলছে‚ জল খুঁজতে যাওয়া মানেই অযথা বিপদ
ডেকে আনা। গুহার কাছেই বড় একটা ক্যাকটাসের ঝাড়। জলের সমস্যা সহজেই মেটানো যেতে
পারে। পকেট থেকে ছুরি বের করে অভি তাই কাজে লেগে পড়ল। ক্যাকটাস ঝাড়ের খানিকটা কেটে
নামিয়ে সাবধানে চেঁছে এক টুকরো পুরে দিল মুখের ভিতর। সামান্য চিবোতেই জলে ভরে গেল
মুখ। আহ্!
সন্ধের অপেক্ষায় সেই গুহার ভিতর অভি পাটোয়ারির খুব বেশিক্ষণ কাটেনি তারপর।
গুহার নীচের দিকে সড়কের উপর মাঝে মধ্যে দু–একটা গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। হঠাৎই
বাড়ল সেটা। সেই শব্দে অভির বুঝতে বাকি রইল না‚ এক ঝাঁক আর্মির গাড়ি ওর খোঁজে বেরিয়ে পড়েছে। এখানে থাকা নিরাপদ নয় আর।
কাছেই ঝাঁকড়া কিছু বুনো গাছের ঝোপ। ও গুহা থেকে বেরিয়ে ঢুকে পড়ল তার ভিতর।
ভাগ্যিস‚ মতলবটা করেছিল। একটু পরেই দেখতে পেল
আর্মির এক সেপাই চড়াই ভেঙে চলে এসেছে গুহার কাছে। উঁকি মেরে ভিতরটা দেখল একবার।
তারপর চলে গেল অন্য দিকে। ঝোপের ভিতর প্রায় নিঃশ্চল হয়ে পড়ে ছিল অভি। হাঁপ ছাড়তে
যাবে‚ হঠাৎই দ্বিতীয় একজন উঠে এল গুহার
কাছে। মামুলি সেপাই নয়। জবরদস্ত এক মেজর র্যাঙ্কের অফিসার। গুহার কাছে এসে
চারপাশে একবার চোখ ঘোরালেন মানুষটি। তারপরেই চাপা গলায় হেঁকে উঠলেন‚ ‘ম্যান‚ ইউ আর কট নাউ। ধরা পড়ে গেছ। চটপট বেরিয়ে এস।’
মানুষটার হঠাৎ ওই কথায় অভি একটুও অবাক হল না অবশ্য। ওর নিজের বোকামির
কারণেই এভাবে ধরা পড়তে হল। তেষ্টা মেটাবার জন্য ওভাবে ক্যাকটাসের ঝাড় কাটতে যাওয়াটাই ভুল হয়েছে।
দেখেই ধরে ফেলেছে মানুষটি।
কোমরে গোঁজা জোড়া পিস্তল। কিন্তু এই অবস্থায় লড়াই করতে যাওয়া বোকামি। বিশেষ
করে অন্য পক্ষ যখন হাতে অস্ত্র তোলেনি। তবু ইতস্তত করছিল। অদূরে আর্মি অফিসার চাপা
গলায় ফের হেঁকে উঠলেন‚ ‘ডোন্ট ফিয়ার ম্যান। আ
অ্যাম ফ্রেন্ড।’
কথা শেষ করে মানুষটি যেভাবে হাত নাড়লেন‚ তাতে উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারির বুঝতে বাকি রইল না‚ পাকিস্তান আর্মির পোষাক পরা অফিসারটি আর যাই হোক শত্রু নয়। নিজের
চোখ–কানকেও তখন যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না ওর। মূহূর্তে বের হয়ে এসে কোনোমতে বলল‚ ‘আপনি‚ আপনি কে?’
‘এজেন্ট ০১৩।’
মুহূর্তে উত্তর এলেও উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারি তখনো হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
আসলে নিজের চোখ–কানকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না।
‘ইয়েস ম্যান।’ বিহ্বল অভি পাটোয়ারির মুখের দিকে তাকিয়ে আগন্তুক ফের মুখ
খুললেন‚ ‘সাপোজ অ্যান আদার রবীন্দ্র কৌশিক‚ দো হি ইজ ডায়েড। লেকিন হাম হ্যায়।
হ্যায় হামারা দেশ‚ অর রহেগা ভি। ডোন্ট ওয়ারি।’
বলা বাহুল্য সামনে মানুষটার ওই কথার পর অভি পাটোয়ারির মতো ডাকাবুকো উইং
কমান্ডারের মুখেও কোনো কথা জোগাল না। দারুণ বিস্ময়ে হাঁ করে তাকিয়ে রইল।
অন্য পক্ষ অবশ্য সময় নষ্ট না করে বললেন‚ ‘শোনো ম্যান তোমার সঙ্গে আমার আর হয়তো দেখা হবে না। তবে আমি আছি। নিরাপদে
দেশে ফিরে যাবার একটা ব্যবস্থা করে দিতে পারব।’
ব্যাপারটা তখনো যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না অভি পাটোয়ারির। আগের মতোই হাঁ করে
তাকিয়ে রইল শুধু। চারপাশে আর্মি জায়গাটা যেভাবে ঘিরে ফেলেছে‚ কীভাবে দেশে ফিরে যাবার ব্যবস্থা হবে কিছুতেই মাথায় ঢুকছিল না। মানুষটা রসিকতা করছে না
তো!
অভির সেই মুখের দিকে তাকিয়ে অন্য পক্ষের ঠোঁটের কোনায় মৃদু হাসি ফুটে উঠল।
কোমরে বাঁধা চামড়ার ছোট ব্যাগের জিপার এক টানে খুলে ফেলে ভিতর থেকে টেনে বের করল
দেহাতি কাশ্মীরীদের মতো দুই টুকরো পোশাক। হাঁটু ছাপিয়ে নামা আধময়লা ঢিলে ‘ফেরান’
আর শালোয়ার। এগিয়ে
দিয়ে বললেন‚ ‘চটপট ড্রেস পালটে নাও। জুতো দিতে
পারলাম না। আপাতত খালি পায়েই চলতে হবে। নিজের ড্রেসগুলো পুড়িয়ে ফেলতে যেও না আবার।
তোমার প্যারাসুট এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যেভাবে ওটা লুকিয়ে রেখেছ‚ সেই ভাবেই লুকিয়ে ফেল কোথাও। অন্তত আগামী তিন–চারটে দিন কারো যেন নজরে
না পড়ে। ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের মানুষ তুমি‚
পারবে না?’
উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারি সারা শরীর এতক্ষণে চনমন করে উঠল। হঠাৎ অবস্থার বিপাকে
হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাসটা ফিরে এসেছে আবার। গা ঝাড়া দিয়ে বলল‚ ‘পারব স্যার। তবু দু–একটা প্রশ্ন ছিল। স্থানীয় ভাষা তেমন জানা…’
‘নো প্রব্লেম।’ অভি পাটোয়ারির কথার মাঝেই অন্য পক্ষ ছোট এক চিরকুট এগিয়ে
দিলেন। ‘পুরো জায়গা আর্মি ঘিরে ফেলেছে। স্থানীয় কারো এদিকে আসার সম্ভাবনা নেই।
ফেরানের হাতার ভিতর দিকে একটা থাম্ব কম্পাস আঁটা রয়েছে। আর এই চিরকুটে ল্যাটিটিউড–লগনিটিউড
মার্ক করা আছে। জায়গাটা খুব দূরে নয়। মাইল চারেকের মধ্যে। রাত কিছু গভীর হলে
পাহারায় ঢিলে পড়বে। বেরিয়ে পড়বে সেই সময়। ভেড়ার পাল নিয়ে দু’জন ভেড়াওয়ালা তাঁবু গেড়েছে ওখানে।
তাদের কাছে গিয়ে শুধু বলবে‚
এজেন্ট জিরো ওয়ান থ্রি। ব্যাস দু–তিন দিন নিশ্চিন্তে ওদের তাঁবুতে ভেড়াওয়ালা হয়ে
কাটিয়ে দিতে পারবে। এর মধ্যে ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’
থামলেন উনি। ইতিমধ্যে বহু চিন্তা পাক খেতে শুরু করেছে অভি পাটোয়ারির মাথায়।
যত সহজে ব্যাপারটা উনি বললেন‚
বাস্তব অত সহজ নয়। ভারতীয় জঙ্গী বিমানের পাইলটের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না‚ মিসিং খবরটা হয়তো আগামী কালের মধ্যেই ইন্ডিয়ান মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হবে। অগত্যা তার খোঁজে
পাকিস্তানী সেনা–পুলিশ এল.ও.সি বরাবর পুরো তল্লাট ছিঁড়ে ফেলবে। ভেড়াওয়ালার তাঁবুও
বাদ যাবে না।
সেই কথাই বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু সামনের মানুষটা বোধ হয় অন্তর্যামী। ফের অল্প হাসলেন তিনি।
‘ঘাবড়িও না ম্যান। ইন্ডিয়ান আর্মির তরফে মিডিয়াকে এখনো জানানো হয়নি খবরটা।
তবে সন্ধের মধ্যেই তোমার খবর পেয়ে যাবে ওরা। মিডিয়াকে তাই আর কিছু জানানো হবে না। আর যেহেতু জায়গাটা
এল.ও.সির খুব কাছে। দিন দুয়েকের মধ্যে তোমার খোঁজ না পেলে পাকিস্তান আর্মির
স্বভাবতই ধারণা হবে‚ হয় তুমি এল.ও.সির ওধারে
ল্যান্ড করেছো‚ নয়তো যে কোনো ভাবেই হোক বর্ডার ক্রস
করে সরে পড়েছ। সার্চিংয়ে ঢিলে পড়ে যাবে। চিন্তা নেই। তাহলে এবার চলি বন্ধু। জয়
হিন্দ।’
কথা শেষ করে মুহূর্তে স্থানত্যাগ করলেন উনি। সেদিকে তাকিয়ে অভি পাটোয়ারি
দ্রুত স্যালুট ঠুকল‚ ‘জয় হিন্দ।’
এই গল্প বেশি ভারি করার দরকার নেই আর। শুধু বলি‚ এজেন্ট–০১৩ যেমন বলেছিলেন‚
ঠিক সেই ভাবেই উইং কমান্ডার অভি পাটোয়ারি এক দেহাতি ভেড়াওয়ালাদের সঙ্গে মিশে ঠিক
তিন দিনের মাথায় পাহাড়ি বন–জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এল.ও.সি ক্রস করে ফিরে এসেছিলেন দেশে। যথাস্থানে ইন্ডিয়ান
আর্মি তাঁকে রিসিভ করে নিয়েছিল। কেউ জানতে পারেনি।*
…………………………………………………………………………………………
*গল্পে উল্লেখিত রবীন্দ্র কৌশিকের কথা
যাঁদের জানা নেই তাঁদের বলি‚
ভারতের সিক্রেট সার্ভিস র–এর এই এজেন্ট পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে যোগ দিয়ে মেজর পদে উন্নীত
হয়েছিলেন। বাকিটা ইতিহাস।
ছবি: রঞ্জন দত্ত (সৌজন্য: ‘শুকতারা’)
আপলোড: ২৫/৮/২০২০
অনবদ্য
ReplyDeleteKhub bhalo
ReplyDeleteভালো লেখা
ReplyDeleteথ্রিলিং
ReplyDelete