Thursday 3 January 2019

গল্প (মোবাইল ভাঃ): ১৩ নম্বর ওষুধ (শিশির বিশ্বাস)


১৩ নম্বর ওষুধ
শিশির বিশ্বাস
গল্প অধরদাদুর। ডাক্তার ছিলেন উনি। কাজ করতেন সরকারি হাসপাতালে। সে অনেক দিন আগের কথা। তখন বড় শহর ছিল হাতে গোনা। জেলা সদরকেও গ্রাম বললে খুব একটা ভুল হত না। গোটা কয়েক সরকারি অফিস, কোর্ট কাছারি নিয়ে ছোট একটু জায়গাতেই যা সামান্য শহরের গন্ধ। তার চৌহদ্দি ছাড়ালেই অন্য দৃশ্য। মোরাম, নয়তো নির্ভেজাল কাঁচা রাস্তা। ঝোপঝাড় আর ধানের খেত। চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই অধরদাদু কাটিয়েছেন এই সব ছোটখাটো শহরের হাসপাতালে। ছোট শহর তাই নামেই সেগুলো হাসপাতাল। তার বেশি নয়। একজন মাত্র ডাক্তার। সেই সাথে দু’একজন করে কম্পাউন্ডার আর নার্সিং-স্টাফ। এছাড়া জনা কয়েক ফরাশ। এদের নিয়েই অধরদাদু তার কাজ চালিয়ে গেছেন সারা জীবন। সমস্যায় যে কখনও পড়েনি এমন নয়। তেমনই এক ঘটনা তিনি বলেছিলেন আমাদের। শুনে মজা পেয়েছিলাম খুব। তবে আসল ঘটনার সময় ব্যাপারটা যে অন্য রকম ছিল, তা বলাই বাহুল্য।
জায়গাটার নাম বলব না। পশ্চিমের এক জেলা সদর। বদলির অর্ডার পেয়ে অধরদাদু তাই তেমন তলিয়ে ভাবেননি। কিন্তু যথাস্থানে এসে তো প্রায় আক্কেল গুড়ুম হবার জোগাড়। সবে ধন নীলমণি একজন মাত্র কম্পাউন্ডার হাসপাতালে। তা তিনি ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছেন মাস খানেক আগে। এখনও ফেরেননি। কবে ফিরবেন তারও ঠিক নেই। নতুন কোনও লোকও আসেনি সেই জায়গায়। এমনকী রোগীদের দেখাশোনার জন্য কোনও নার্সিং-স্টাফও নেই। আছে জনা কয়েক ফরাশ। কাজ চালাতে হবে তাদের দিয়েই। শুনে বেজায় ঘাবড়ে গেলেন অধরদাদু। যাকে রিলিভ করবেন সেই আগের ডাক্তার যদুনাথ চাকলাদার তো বাক্স প্যাটরা গুছিয়ে তৈরি হয়েই ছিলেন। হেসে বললেন ‘সেজন্য ঘাবড়াবার কারণ নেই মশাই। চতুর্ভুজ রয়েছে। করিতকর্মা ছেলে। ঠিক চালিয়ে নেবে। কম্পাউন্ডার ব্রজেন বটব্যাল লোকটা আস্ত ঘুঘু। যতদিন এখানে আছেন এভাবেই জ্বালাবে ছোঁড়াটা। একবার বাড়ি গেলে ফেরবার নাম গন্ধটি করবে না। আমি তো ওই চতুর্ভুজকে নিয়েই চালিয়ে গেলাম চারটে বছর। আপনিও উতরে যাবেন। সে যাকগে, আমি আবার বিকেলের ট্রেন ধরব। যা বুঝবার বুঝে নিন দেখি।’
প্রায় ঝড়ের বেগে বলে গেলেন যদুনাথ চাকলাদার। সন্দেহ নেই, ট্রেন সেই বিকেলে হলেও এই সাত সকালেই বড্ড তাড়া রয়েছে তার। ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকিয়ে অধরদাদু থতিয়ে গিয়ে বললেন, ‘চ-চতুর্ভুজ কে?’
 ‘অ, আলাপ হয়নি বুঝি! চতুর্ভুজ, এই চতুর্ভুজ, কোথায় থাকিস হতচ্ছাড়া? এদিকে আয়।’
যদুনাথ চাকলাদারের হাঁক শুনে ওদিকের কোনও ঘর থেকে ছুটে এল ছোটখাটো চেহারার মাঝবয়সী একটা মানুষ। পরনে ঝুলে পড়া ঢোলা হাফ প্যান্ট। গোঁজা শার্ট। দু’হাতে সেই প্যান্ট যথাস্থানে তুলে মস্ত এক সেলাম ঠুকে বলল, ‘জি, বোলেন সাব।’
‘কোথায় থাকিস! নতুন ডাক্তার সাহেব এসে গেছেন। তোর খোঁজ করছেন।’ ফের খেঁকিয়ে উঠলেন যদুনাথ চাকলাদার।
‘অ্যাঁ লৌতুন ডাগদরসাব আসিয়ে গেছেন! জি, নমস্তে সাব।’ নিমেষে কোমর বেঁকিয়ে ফের মস্ত একটা সেলাম ঠুকল লোকটা। তারপর সোজা হয়ে খইনির ছোপধরা দাঁত আর ঝাঁটার মতো গোঁফ দু’দিকে কান পর্যন্ত ছড়িয়ে একগাল হেসে বলল, ‘চতুর্ভুজ রহিয়েছে, কুছু ভাববেন না সাব।’
‘ব্যস, নিশ্চিন্তি হয়ে গেলেন মশাই। আর কোনও ভাবনা নেই।’ যদুনাথ চাকলাদার অধরদাদুকে সান্ত্বনা দিলেন, ‘দু’দিনেই টের পাবেন, এ হাসপাতালে চতুর্ভুজ মানে চতুর্ভুজই। একাধারে ফরাশ, নার্স, কম্পাউন্ডার, মায় ডাক্তার পর্যন্ত। এদিককার রোগী হাসপাতালে এসে খোঁজ করে চতুর্ভুজের। ডাক্তারের কাছে আসে কালেভদ্রে। নিশ্চিন্তে ঘরে বসে ঘুমবেন শুধু। দিনে একবার নাম কা ওয়াস্তে রাউন্ড।’
যদুনাথ চাকলাদার যে বিশেষ বাড়িয়ে বলেননি, সেটা সেই প্রথম দিনই বেশ টের পেলেন অধরদাদু। হাসপাতালের পাশেই কোয়ার্টার। রাতভর ট্রেন জার্নি করে শরীরটাও তেমন জুত ছিল না। ঘরে বসেই কাটিয়ে দিলেন। কেউ বিরক্ত করতেও এল না। কিন্তু অধরদাদু অন্য ধাতের মানুষ। পরের দিন ভোরেই এসে হাজির হলেন হাসপাতালে নিজের চেম্বারে। কিন্তু ঘণ্টা কয়েক বসেই রইলেন। কোনও পেশেন্টই তার ধারেকাছে মাড়াল না। অফিসের খাতাপত্র দেখেই কেটে গেল সারাটা সময়। দিন দুই এভাবে কাটার পর অধরদাদু একদিন চতুর্ভুজকে ডেকে বললেন, ‘বাবা চতুর্ভুজ, তেমন বুঝলে দু’একটা পেশেন্ট আমার কাছেও পাঠিয়ে দিস।’
কাজ হল। সেই দিনই একটু বেলায় এক দেহাতি রোগী এসে হাজির তার ঘরে। বেশ যত্ন করেই তাকে দেখলেন অধরদাদু। তারপর স্লিপে ওষুধের নাম লিখে পাঠিয়ে দিলেন চতুর্ভুজের কাছে।
সে সময় সরকারি হাসপাতালে রোগীদের মিক্সচার ওষুধ দেওয়া হত। খলনুড়িতে বিভিন্ন ওষুধ মিশিয়ে জলে গুলে তৈরি হত বিভিন্ন রোগের মিক্সচার। হাসপাতালে কম্পাউন্ডারই তৈরি করতেন। তো অধরদাদু রোগীর হাতে স্লিপ লিখে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একটু পরেই চতুর্ভুজ প্রায় ছুটতে-ছুটতে এসে হাজির। হাতে সেই স্লিপ। সেলাম ঠুকে ঝড়ের বেগে বলল, ‘ডাগদরসাব, লম্বর কিধর?’
চতুর্ভুজের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারলেন না অধরদাদু। চতুর্ভুজ যদি ইংরেজি লেখা বুঝতে না পারে, সেই আশঙ্কায় মিক্সচারের নাম গোটা-গোটা হিন্দি অক্ষরেই লিখেছেন। থতিয়ে গিয়ে বললেন, ‘ক-কী লম্বর?’
‘দাওয়াই কা লম্বর ডাগদরসাব।’ ঝটপট জবাব এল ওদিক থেকে।
এবার কিছুটা যেন মালুম হল অধরদাদুর। উঠে দাঁড়িয়ে হনহন করে চললেন ডিসপেনসারির দিকে। পিছনে চতুর্ভুজও অনুসরণ করল তাঁকে। ডিসপেনসারির ভিতরে ঢুকে অধরদাদু মালুম পেলেন তাঁর অনুমান মিথ্যে নয়। শেলফ জুড়ে বড়-বড় বোতলে নানা রঙের মিক্সচার ওষুধ। বোতলের গায়ে এক, দুই করে নম্বর। বুঝতে বাকি রইল না, রোগী দেখে ডাক্তার নির্দিষ্ট ওষুধের নম্বর লিখে দেন। চতুর্ভুজ সেই নম্বরের ওষুধ বোতল থেকে রোগীর শিশিতে ঢেলে দেয়। আর দিনের পর দিন এই কাজ করে চতুর্ভুজেরও জানা হয়ে গেছে কোন রোগে কত নম্বর দাওয়াই। ব্যাপারটা ঘুণাক্ষরেও জানায়নি যদুনাথ চাকলাদার। অগতির গতি চতুর্ভুজকেই শেষে বললেন, ‘দাওয়াইয়ের খাতাটা কোথায় জানিস?
অধরদাদুর আশঙ্কা ছিল নম্বর ধরে ওষুধের লিস্ট পাওয়া যাবে কিনা। কিন্তু চতুর্ভুজের বুঝতে বিলম্ব হল না। চটপট শেলফের তলায় এক অন্ধকার খোপ থেকে এক জাবদা খাতা বের করে আনল। সেই খাতার পাতা উলটে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল অধরদাদুর। খাতার পাতায় এক দুই করে নম্বরের পাশে ওষুধের নাম। খাতায় লেখা সেই নাম মিলিয়ে নির্দিষ্ট নম্বরটা এবার তিনি লিখে দিলেন স্লিপে। খাতাটা নিয়ে এলেন সঙ্গে। চতুর্ভুজকে নিয়ে হাসপাতাল চালাতে হলে এখন তাকে এই নম্বর মুখস্থ করতে হবে।
দিন কয়েক পরের কথা। এক সকালে চেম্বারে এসে বসেছেন, চতুর্ভুজ এসে বলল, ‘সাব, বিশ লম্বর দাওয়াই খতম। বানাইতে হোবে?’
খানিক বাদে অধরদাদু ডিসপেনসারিতে গিয়ে কুড়ি নম্বর মিক্সচার তৈরি করছেন। পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল চতুর্ভুজ। একটু মাথা চুলকে বলল, ‘কুছ-কুছ দাওয়াই হামি ভি বানাইতে পারি ডাগদরসাব।
‘সে তো ভাল কথা রে!’ উৎসাহ দিয়ে অধরদাদু বললেন, ‘খুব ভাল। আর একটা কথা, তের নম্বরে কোনও ওষুধ লেখা নেই দেখলাম। আজ ওই নম্বরে নতুন একটা মিক্সচার তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি। স্লিপে লিখে দিলে এর পর থেকে দিবি।’
অধরদাদুর কথায় খুশিতে চোখ দুটো জুলজুল করছিল চতুর্ভুজের। নিবে গেল মুহূর্তে। প্রায় আঁতকে উঠে বলল, ‘ন-নেহি ডাগদরসাব।’
‘কেন রে?’
‘তের বহোত খতরনক লম্বর। ওহি লম্বরকা দাওয়াই কিসিকো মত দিজিয়ে। বহোত খারাব হইয়ে যাবে।’
চতুর্ভুজের কথায় হেসে ফেললেন অধরদাদু। হালকা ভাবেই বললেন, ‘কী করে জানলি?’
‘হামি জানে সাব। বহোত খারাব লম্বর তের।’ জোরে মাথা দুলিয়ে চতুর্ভুজ বলল, ‘পুরানা ডাগদরসাব ভি বোলিয়েছেন।’
‘আচ্ছা, আচ্ছা সে দেখা যাবে।’ চতুর্ভুজের কথায় কান না দিয়ে অধরদাদু বললেন, ‘এখন ওষুধটাতো তৈরি করে দিয়ে যাই।’
এরপর তিনি তের নম্বর ওষুধ তৈরি করে বড় একটা বোতলে ভরে গায়ে নম্বর লিখে চতুর্ভুজকে সেটা শেলফে তুলে রাখতে বলে চেম্বারে চলে গেলেন।
এর দিন কয়েক পরের কথা। হাসপাতালের বিভিন্ন ব্যাপারে জেলার বড়কর্তা ডি.সি সাহেবের কাছে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছিলেন অধরদাদু। দশটায় টাইম দিয়েছেন তিনি। সেইজন্য তৈরি হচ্ছিলেন। চতুর্ভুজ এসে বলল, ‘সাব ভরতি হুয়া পিসেন্টকা বুখার বহোত বাড়িয়েছে।’
গতকালই হাই ফিভার নিয়ে এক রোগী হাসপাতালে এসেছিল। অবস্থা দেখে অধরদাদু তাকে হাসপাতালে ভরতি করে নিয়েছেন। শুনেই ছুটলেন সেদিকে। যেমন ভেবেছিলেন ততটা খারাপ নয়। গতকাল ওষুধ দেবার পর জ্বর অনেকটাই কমে গিয়েছিল। ফের কিছু বেড়েছ। ওষুধ পালটানো দরকার। চতুর্ভুজকে বললেন, ‘আমি জরুরি দরকারে ডি.সি’র অফিসে যাচ্ছি, তুই তের নম্বর ওষুধটা এখুনি এক দাগ খাইয়ে দে। দু’ঘণ্টার মধ্যে যদি না ফিরি, জ্বর যদি আরও বাড়ে ফের এক দাগ।’
‘তের লম্বর দাওয়াই!’ চোখ কপালে তুলে প্রায় আকাশ থেকে পড়ল চতুর্ভুজ, ‘বেচারা মরিয়ে যাবে ডাগদরসাব। অলগ কুছু দেন।’ চতুর্ভুজের গলায় প্রায় মিনতি ঝরে পড়ল।
কিন্তু অধরদাদুর উপায় ছিল না। হাতে সময়ও নেই। বললেন, ‘না রে পাগলা। সে ভয় নেই। আমি বের হচ্ছি। যেভাবে বলেছি সেইভাবে ওই তের নম্বর ওষুধই খাইয়ে দে।’
পেশেন্টের ব্যাপারটা মাথায় ছিল। অধরদাদু তাই অযথা দেরি করেননি। কাজ সারা হতে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ফিরে এলেন হাসপাতালে। দূর থেকে তাকে দেখেই প্রায় উদভ্রান্তের মতো ছুটে এল চতুর্ভুজ, ‘সত্যনাশ হইয়েছে ডাগদরসাব।’
‘কেন রে! কী?’ উদ্বিগ্ন অধরদাদু বললেন।
‘তের লম্বর দাওয়াইয়ে পিশেন্টের হাল আউর খারাপ হইয়েসে। বাঁচবে নাই। বেচারা গরীব আদমি। হায়-হায়!’ আক্ষেপে কপাল চাপড়াল চতুর্ভুজ।
শুনে সেই অবস্থায় প্রায় হন্তদন্ত হয়ে অধরদাদু ছুটলেন রোগীর কাছে। দেখেই বুঝলেন, খুবই খারাপ অবস্থা। সাড় নেই। পড়ে আছে আচ্ছন্ন হয়ে। জ্বরও কমেনি। তের নম্বরে জ্বরের একটা অন্য ওষুধ তৈরি করেছিলেন অধরদাদু। তাতে রোগীর এ অবস্থা কেন হল, বুঝতে পারলেন না। কিন্তু হার মানার পত্র নন তিনি। সেকালের ডাক্তার। অভিজ্ঞতাও প্রচুর। ঘণ্টা কয়েক ধরে এরপর চলল যমে মানুষে টানাটানি। জরুরি দু'একটা ওষুধ, ইনজেকশন হাসপাতালে ছিল না। কিনেও আনাতে হল। এরপর রোগীর অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে বুঝে অধরদাদু কোয়ার্টারের দিকে গিয়েছিলেন। সন্ধের আগে চতুর্ভুজ এসে একগাল হেসে বলল, ‘পিশেন্ট বিলকুল ঠিক হইয়ে গেছে সাহাব। বাপরে বাপ, তের লম্বর কী খতরনক চিজ! হামি আগেই বোলিয়েছিলম।’
চতুর্ভুজের সেই মুখের দিকে তাকিয়ে অধরদাদু বললেন, ‘তের নম্বর বোতলটা একবার আন দেখি চতুর্ভুজ। এমন তো হবার কথা নয়!’
‘জি, সিটো তো নাই হুজুর।’ অধরদাদুর কথায় চতুর্ভুজ সামান্য মাথা চুলকে বলল।
‘নেই মানে?’ অবাক হয় বললেন অধরদাদু।
‘জি, ওহি খতরনক দাওয়াই হামি দাওয়াখানামে রাখতে ভরসা পাই নাই। রাখিয়েছিলম পাশে মালখানা ঘরে। আপনে বোলিয়ে যওয়ার পর গিয়ে দেখি সিটো নাই। কোই লিয়ে গিয়েছে বোতল।’
মালখানা মানে হাসপাতালের ঝড়তি-পড়তি মালের গুদামঘর। সেখানে রাখলে এমন হওয়া বিচিত্র নয়। অধরদাদু তাড়াতাড়ি বললেন, ‘তাহলে তের নম্বর ওষুধ রোগীকে দিলি কেমন করে?’
‘কেঁও!’ দু’চোখে ঝিলিক মেরে চতুর্ভুজ বলল, ‘বোলিয়েছিলম না, কুছ দাওয়াই হামি ভি বানাইতে পারে। এক লম্বর দাওয়াইয়ের সাথ তিন লম্বর মিশাইয়ে দিলম। ব্যস, তের হইয়ে গেল।’
‘অ্যাঁ! এক নম্বর ওষুধের সঙ্গে তিন নম্বর মিশিয়ে রোগীকে খাইয়েছিস তুই!’ অধরদাদুর চোখ তখন কপালে।
‘জি, হাঁ সাব। একের পিছে তিন দিলে তো তেরই হোয়। লম্বরের দাওয়াই না থাকলে এমন কত করিয়েছি।' কিছুমাত্র না দমে একগাল হেসে চতুর্ভুজ ব্যক্ত করল। আর সেই উত্তরে অধরদাদু হাঁ করে শুধু তাকিয়ে রইলেন তার দিকে। মুখে কোনও কথাই সরল না।
ছবি: অনুপ রায় (সৌজন্য: আনন্দমেলা)
আপলোড: ২০/৬/২০১৯


2 comments: